Close

ইজারার শর্ত ভেঙে বালু উত্তোলন, ভাঙছে পদ্মার তীর

bali

পাবনা সদরে পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষে বালু তোলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। বালু উত্তোলনের কারণে পাড় ভেঙে ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের নিউচর পূর্বপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনটি করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বালু মহালে ইজারার শর্ত ভেঙে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফসলি জমি রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিও তাঁদের।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, নদীপাড়ের বাসিন্দা ও স্থানীয় কৃষকেরা দুপুর ১২টার দিকে একত্র হয়ে নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা নদীর পাড়েই হাতে হাত রেখে দীর্ঘ মানববন্ধন তৈরি করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি চলে।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন চরতারাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জালাল আলী বিশ্বাস, ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রতন খান, স্থানীয় কৃষক নিজাম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, আবদুর রব প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পদ্মার মাঝামাঝিতে একটি বালু মহাল আছে। প্রতিবছর ইজারার মাধ্যমে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ইজারার শর্ত ভেঙে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল অপরিকল্পিতভাবে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছে। এতে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনে কিছু ফসলি জমি ভেঙে নদীতে চলে গেছে। আরও কয়েক শ বিঘা জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।

কৃষক নিজাম উদ্দিন বলেন, নদীপাড়ে তাঁদের যে জমি আছে তা দুই ফসলি। এসব জমিতে ধান, পাট, বাদাম, তিল ও ভুট্টার আবাদ করেন। ফসল ঘরে তুলেই তাঁদের জীবিকা চলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ১৮ থেকে ২০টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। আর নদীর পাড়ে দাঁড়ালে চোখে পড়ে ভাঙনের দৃশ্য। কিছুক্ষণ পরপর মাটি ভেঙে পড়ছে নদীতে।

জেলা প্রশাসনের দেওয়া বালুমহাল ইজারার শর্তের ১৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, নদীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে বালু উত্তোলন করতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই অস্বাভাবিক গভীরতায় বালু উত্তোলন করা যাবে না।

অন্যদিকে ১৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর ভাঙনের আশঙ্কা থাকলে এমন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ইজারার শর্ত ভেঙে নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে কেউ বালু উত্তোলন করলে তা অবশ্যই অবৈধ। অন্যদিকে নদীভাঙন হলে সে এলাকায় বালু তোলা যাবে না। দ্রুত সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top