সরকার মূল দাবি মেনে নেওয়ায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রোববার ডিবি অফিস থেকে ৬ সমন্বয়কের দেওয়া এক লিখিত বার্তায় আন্দোলন স্থগিতের এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিও জানানো হয় লিখিত বার্তায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানান ৬ সমন্বয়ক।
লিখিত বার্তায় সই করেছেন, মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাস্সুম।
বার্তায় বলা হয়, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ সহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সকল অনাকাঙ্খিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবী জানাচ্ছি।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের প্রধান দাবী ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতিমধ্যে সরকার পূরণ করেছেন। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহবান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মূর্হত থেকে আমাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করছি।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এক পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ২৬৬।
সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দেয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ জুলাই রাত থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। সহিংসতার ঘটনায় শুধু রাজধানীতে ২২৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এতে রোববার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৭৬৪ জনকে।