Close

বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি চেয়ে ১৮ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

jail

‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছেন দেশের ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা হৃদয় মণ্ডলের নিঃর্শত মুক্তি দাবি করছি। আর যে কিশোর ছাত্ররা মৌলবাদী চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে অপমান করে পুলিশে সোপর্দ করেছে তাঁদের মধ্যে মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

বিবৃতিদাতারা হলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সারওয়ার আলী, আবেদ খান, সেলিনা হোসেন, লায়লা হাসান, আবদুস সেলিম, মফিদুল হক, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবীর, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ ও হারুন হাবীব।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলা নববর্ষের প্রভাতে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বিদাত বলে ঘোষণা আমাদের মনে এই ছায়াপাত করে যে, রাষ্ট্রকাঠামোর অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মৌলবাদী শক্তি তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে। বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে যা সামাজিকভাবে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।’

বিবৃতিতে বিশিষ্ট ১৮ নাগরিক বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কতিপয় সদস্য যখন সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে শিক্ষক, শিল্পী ও সাধারণ মানুষকে নানাভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত করেন, তখন জনগণের মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে, সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের মূল চারনীতি ও মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করতে সচেষ্ট নয়।’

‘শিশু-কিশোরদের অবৈজ্ঞানিক শিক্ষা ও সাম্প্রদায়িক পাঠদানই আজকের বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে দেশের শিক্ষাধারায় বিজ্ঞানভিত্তিক ও সমতার সমাজ গড়ার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে পাঠ্যসূচি থেকে যে কোনো ধরনের ‘ঘৃণা সঞ্চারী’ রচনা বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এর আগে গত ২০ মার্চ বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির মানবিক শাখার ক্লাস নেওয়ার সময় হৃদয় মণ্ডল ‘ধর্ম অবমাননা’ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ২২ মার্চ মামলা করেন স্কুলের অফিস সহকারী মো. আসাদ। সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে গত ২৩ মার্চ ও ৪ এপ্রিল আদালতে হৃদয় মণ্ডলের জামিন চাওয়া হয়। তবে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ নিয়ে হৃদয়ের স্ত্রী ববিতা হালদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top