অভিনেত্রী তমা মির্জা জানিয়েছেন, তার বর্তমান সচ্ছ্বল অবস্থা সিনেমায় যুক্ত হওয়ার কারণেই হয়েছে। বিষয়টি অস্বীকার করলে নিজের সঙ্গেই তার নিজের বেইমানি করা হবে।
অভিনয়ে নিজের অধ্যবসায়, ধৈর্য, কাজের প্রতি সততা, দর্শকের ভালোবাসা, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তি সর্বোপরি বাবা-মায়ের দোয়ায় তমা মির্জা তার অভিনয় জীবনের এক যুগে এমন এক অবস্থানে এসে পৌঁছেছেন যে সময়টাতে নির্দ্বিধায় পরিচালকরা তাকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন, তার ওপর আস্থা রাখছেন।
নিজের বর্তমান অবস্থান এবং নেপথ্যের কথা বলতে গিয়ে তমা বলেন, এটা সত্যি সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি আমি। আমার বাবা সরকারি চাকরি করতেন। স্টাফ কোয়ার্টারে শৃঙ্খলিত জীবন কেটেছে আমার। গাড়ি ছিল না, থাকার তেমন জায়গা ছিল না। আমি অনায়াসে তা স্বীকার করছি। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার বর্তমান যে জীবন হয়েছে, গাড়ি হয়েছে, থাকার জায়গা হয়েছে-সুন্দর একটা জীবন হয়েছে, সবই কিন্তু ফিল্ম থেকে হয়েছে। এটা অস্বীকার করলে নিজের সঙ্গেই নিজের বেইমানি করা হবে। আমাকে শুরুতে ফিল্ম পলিটিক্সের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু শ্রদ্ধেয় সোহানুর রহমান সোহান ভাই সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করে অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই তার এক মন এক প্রাণ সিনেমায় আমাকে কাজ করার সুযোগ দেন। আমি ঘুরে দাঁড়াই।
নিজের সাফল্যের পেছনের কারিগরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এ নায়িকা।
বলেন, শাহনেওয়াজ কাকলী আপার সিনেমাতে অভিনয় করে নিজেকে ভেঙ্গেছি, আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। রায়হান রাফির খাঁচার ভিতর অচিন পাখি-আমার আলাদা এক অবস্থান সৃষ্টি করেছে। গান বাংলার তাপস ভাই-মুন্নী আপার কারণে স্টেজ শোতে আমার গ্লামারাস উপস্থিতি বেড়েছে। এই শ্রদ্ধেয় মানুষগুলোর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কতৃজ্ঞ সব পরিচালক-সাংবাদিকদের কাছে।
উল্লেখ্য, সোহানুর রহমান সোহানের ‘এক মন এক প্রাণ’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে মূলত আলোচনায় আসেন তমা মির্জা।
শাহনেওয়াজ কাকলী’র ‘নদীজন’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য ২০১৫ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। এরপর বৃদ্ধি পায় তমা মির্জার সিনেমাতে অভিনয়ের ব্যস্ততা।
ক্ল্যাসিক্যাল ড্যান্সের সব ফর্ম রপ্ত করা এই অভিনেত্রী অনেক শ্রম দিয়ে আজকের অভিনেত্রী তমা মির্জাতে নিজেকে পরিণত করতে পেরেছেন। যে কারণে বিশেষত ওটিটি প্লাটফরমের চ্যালেঞ্জিং চরিত্র নির্ভর কাজগুলো করতে পারছেন তিনি।
সর্বশেষ রায়হান রাফির ওয়েব ফিল্ম ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’তে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। এতে পাখি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরস্কৃতও হয়েছেন। ২০১০ সালে এম বি মানিক পরিচালিত ‘বলোনা তুমি আমার’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যদিয়ে সিনেমায় অভিষেক হয় তমা মির্জার।
ঈদের আগেই তার নতুন একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করার কথা। ঈদের পরেও ঠিক তাই। তমা অভিনীত উল্লেযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘পালাবার পথ নেই’, ‘গ্রাস’, ‘অহংকার’, ‘তোমার কাছে ঋনী’, ‘গেম রিটার্নস’, ‘ইভটিজিং’, ‘গহীনের গান’, ‘চল পালাই’ ইত্যাদি।