চট্টগ্রামে নেভি কনভেনশন হলে বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ৩৮ জন নারীর স্বর্নালংকার, ১২৭ টি মোবাইল ফোন ছিনতাই ও লুটপাট করেছে সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা।
এ জঘন্যতম ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সচেতন মহল।
এ বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ফখরুল আনোয়ারকে। তিনি ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের ছোট ভাই এবং সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির চাচা।
আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারের ছেলের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের নাতনির বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকার নেভি কনভেনশন সেন্টার থেকে ফখরুল আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে খুলশী থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ওই কনভেনশন সেন্টারে ফখরুল আনোয়ার ও শাহজাদী সৈয়দা সায়েমা আহমেদের একমাত্র ছেলে সৈয়দ মিনহাজুল আনোয়ারের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের ছেলে নিজামুল আলম ও সৈয়দা শারমিন আকতারের বড় মেয়ে সৈয়দা মাহবুবা হোসনে আরার বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। তারা ছাড়াও ওই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী নৌবাহিনী পরিচালিত ওই কনভেনশন সেন্টারে যান। প্রথমে তারা সেখানে ভোজে অংশ নেন। ঘন্টাখানেক পরে সেখানে আরও প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আসেন। তাদের অনেকের হাতে লাঠিসোটা ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে একপর্যায়ে ফখরুল আনোয়ারকে ঘিরে রাখেন। ওই সময় কনভেনশন সেন্টারের গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে গেইটের বাইরে বিভিন্ন জায়গা থেকে একে একে আরও নেতাকর্মী এসে জড়ো হতে থাকেন।
জানা গেছে, এ সময় সুযোগ বুঝে সাবেক মেয়র মনজুর আলম ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ফখরুল আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এ সময় ফখরুলকে বহনকারী গাড়ির ভেতরে ও ছাদে অনেক ছাত্রকে উঠতে দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কেউ কেউ আমন্ত্রিত নারী অতিথিদের হেনস্তা করেছেন। অতিথিদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ৩৮ জন নারীর স্বর্নালংকার ও ১২৭ টি মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়েছে।
একপর্যায়ে ফখরুল আনোয়ারকেও তারা মারধর করেছেন।
‘এটা কি মব জাস্টিসের মধ্যে পড়ে না’— এমন প্রশ্ন রেখে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তারা প্রথমে পেট ভরে খেয়েছে। এরপর লোকজন জড়ো করে পাত্রের বাবা ফখরুল আনোয়ারকে লাঞ্ছিত করেন। অতিথিদেরও কাউকে কাউকে অপদস্থ করেছেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটবে আমরা কেউ কল্পনাই করিনি। এ জঘন্যতম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হউক।’