ছাত্রলীগের পদবাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য, মাদকসেবী-কারবারি ও অনুপ্রবেশকারীদের পদায়নসহ সবকিছুর অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া আখ্যায়িত করে ছাত্রলীগকে বিতর্কমুক্ত করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এমনকি তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দেওয়া বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেছেন জয়-লেখক।
সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন ও প্রস্তুতি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি জয় বলেন, বিভিন্ন সময় যে পদবাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। অর্থের বিনিময়ে আমরা কোনো ইউনিটের কমিটি দেইনি। আমরা বার বার বলেছি, কেউ যদি পদবাণিজ্যের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে, আমরা সেই শাস্তি মাথা পেতে নেব।
পদবাণিজ্যের বিষয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতার অডিও ফাঁস হয়েছে- সে বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বেশকিছু অডিও শুনেছি, কিন্তু সেগুলোর আনুষ্ঠানিক কোনো কিছু আমরা পাইনি। তাদের ব্যক্তিগত ফোনালাপের একটি অংশ হিসেবে তা প্রচার পেয়েছে।
একই বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আপনারা ফোনালাপ শুনে দেখবেন যে সেখানে ছাত্রলীগের পদের জন্য কোনো টাকা চাওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক তাদের থাকতে পারে, সেই লেনদেনের অডিও ফেসবুকে ছেড়ে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের পদবাণিজ্যের অভিযোগ দেখভালের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে তাদের অবস্থান জানতে চাইলে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, পদবাণিজ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।
কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত অংশে কতজনকে পদ দেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্রলীগের নির্বাহী সংসদে ৩০১ জন নেতা। এর বাইরে কতজন আছে আমরা জানি না। দপ্তর সেল এটি বলতে পারবে। তবে সংখ্যা কত সেটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংখ্যাটা জানি না। অনেক হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো তুলে ধরেন আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেন, করোনা মহামারির সময় অক্সিজেন সেবা, টেলিমেডিসিন সেবা, গরিব ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুক্তভোগীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, রমজানে বিভিন্ন জায়গায় ইফতার বিতরণ এবং বিভিন্ন সময় গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগের যেসব ইউনিটে কমিটি নেই, তারা কীভাবে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, জাতীয় সম্মেলনের জন্য প্রতিটা ইউনিটের আলাদা আলাদা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। প্রত্যেক ইউনিট থেকে সম্মেলনের ডেলিগেট ও কাউন্সিলর নির্ধারণ করার জন্য আমাদের উপ-কমিটি রয়েছে। যেখানে কোনো ধরনের কোনো কমিটি নেই, সেখান থেকেও যেন তারা ছাত্রলীগের সম্মেলনে বৈধভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা হবে। সম্মেলনকে সফল করার জন্য আমরা সব ব্যবস্থা করবো।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইবরাহীম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদসহ সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।