Close

জাতীয় সরকারের গুঞ্জন উঠেছে কূটনৈতিক পাড়ায়

বাংলাদেশে কিছুদিন পরপর জাতীয় সরকার প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি, মহল জাতীয় সরকার নিয়ে কথা বলে। এখন নতুন করে আবার জাতীয় সংসদ জাতীয় সরকারের গুঞ্জন উঠেছে কূটনৈতিক পাড়ায়। বাংলাদেশে গত ১৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। সে সময় আওয়ামী লীগ মহাজোটের শরিকদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ মহাজোট এবং ১৪ দল উভয় দলের সদস্যদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করে সরকার গঠন করেছিল। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে যে মন্ত্রিসভা গঠিত হয় সেখানে আওয়ামী লীগের বাইরে কাউকে রাখা হয়নি।
বিভিন্ন সময়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেনারেল সৈয়দ ইব্রাহিমসহ কিছু ব্যক্তিবর্গ জাতীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু এই সমস্ত দাবিগুলো তেমন রাজনৈতিক গুরুত্ব পায়নি। তবে এ ধরনের জাতীয় সরকারের বক্তব্য উপস্থাপনের পিছনে যে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি ছিলো, সেটি সুস্পষ্ট। এমনকি জাফরুল্লাহ চৌধুরী জাতীয় সরকারের কারা কিভাবে কোন পদে থাকবেন সে সম্পর্কেও একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিলেন। যদিও এগুলো রাজনৈতিক ভিত্তি পায় না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিকপাড়ায় নতুন করে জাতীয় সরকারের বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, এগুলো কোনো গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক আড্ডায় এক ধরনের কানাঘুষা। এটি কোনো কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে না।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট দানা বেঁধে উঠেছে। সরকার লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে, কৃচ্ছতা সাধনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সঙ্গে আমদানি ব্যয়ের সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও নানা রকম অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। এই অর্থনৈতিক সংকটের প্রধান কারণ হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর ফলে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি মূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশকে নয় শুধু, বিশ্বের অনেক দেশকে সংকটে ফেলেছে। এরকম সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের করণীয় কি বা কি করা উচিত, এ নিয়ে নানারকম মতামত দিচ্ছেন। তবে সুশীল সমাজের একটি অংশ এই সময়ে একটি জাতীয় সরকারের কথা সামনে নিয়ে এসেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে যে, বাংলাদেশের যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতায় এখন থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাধান করা উচিত। তবে এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে কূটনৈতিক মহলে তারা আলাপ-আলোচনা করছেন, কূটনীতিকরাও এই বিষয়গুলো নিয়ে শুনেছেন। তবে তারা কেউই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে জানা যায়নি।
কূটনৈতিক মহল মনে করেন যে, একটি নির্বাচিত সরকারের কার্যক্রম কিভাবে হবে তা সেই দেশের সরকারই ঠিক করবে। তারা জাতীয় সরকার করবে না দলীয় সরকার করবে, সেটি তাদের বিষয়। বরং কূটনীতিকরা আগামী নির্বাচনকে অর্থপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করতে চায়। জাতীয় সরকারের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ নেই। সুশীলদের কারো কারো মধ্যে জাতীয় সরকারের পরিধি বড় করা এবং সরকারের অংশীদার হওয়ার একটা প্রচ্ছন্ন ইচ্ছা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাপ্রবাহ তাদের সেই ইচ্ছাকে আরো জোরালো করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top