ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের খোলা চিঠি দেয়ার প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের ৫০টি পত্রিকার সম্পাদক।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের অনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া একটি খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং নোবেল বিজয়ীদের এ ধরনের বিবৃতি এবং চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না এমন দাবি ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থি। আমরা মনে করি, তারা মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই আমরা তাদের অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কিনা, তা তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো মহলের এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, সম্পাদক, ডেইলি অবজারভার; গোলাম রহমান, সম্পাদক, আজকের পত্রিকা; তাসমিমা হোসেন, সম্পাদক, ইত্তেফাক; আবুল কালাম আজাদ, প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা; ইমদাদুল হক মিলন, প্রধান সম্পাদক, কালেরকণ্ঠ; আলমগীর হোসেন, সম্পাদক, সমকাল; সাইফুল আলম, সম্পাদক, যুগান্তর; নঈম নিজাম, সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন; ফরিদ হোসেন, সম্পাদক, ইউএনবি; শ্যামল দত্ত, সম্পাদক, ভোরের কাগজ; নাঈমুল ইসলাম খান, ইমিরিটাস এডিটর; আলতামাশ কবির, সম্পাদক, সংবাদ; আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সম্পাদক, পিপলস টাইম; রেজাউল করিম লোটাস, সম্পাদক, ডেইলি সান; শাহজাহান সরদার, সম্পাদক, বাংলাদেশ জার্নাল; নাসিমা খান মন্টি, সম্পাদক, আমাদের নতুন সময়; রফিকুল ইসলাম রতন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বাংলাদেশ বুলেটিন; ফারুক আহমেদ তালুকদার, সম্পাদক, আজকালের খবর; সন্তোষ শর্মা, সম্পাদক, কালবেলা; শরীফ শাহাবুদ্দিন, সম্পাদক, বাংলাদেশ পোস্ট; শামীমা এ খান, সম্পাদক, জনকণ্ঠ; কমলেশ রায়, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সময়ের আলো; মুস্তাফিজ শফি, সম্পাদক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ; মোস্তফা মামুন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দেশ রূপান্তর; বেলায়েত হোসেন, সম্পাদক, ভোরের ডাক; চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক বাংলা; শামীম সিদ্দিকি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আলোকিত বাংলাদেশ; আব্দুল মজিদ, সম্পাদক, সংবাদ সারাবেলা; রিমন মাহফুজ, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সংবাদ প্রতিদিন; মফিজুর রহমান খান বাবু, সম্পাদক, বাংলাদেশের আলো; আরিফুর রহমান দোলন, সম্পাদক, ঢাকা টাইমস; নুর হাকিম, সম্পাদক, সকালের সময়; মো. জসিম, সম্পাদক, আমার বার্তা; আখলাকুল আম্বিয়া, সম্পাদক, স্বাধীন বাংলা; এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী, সম্পাদক, আজকের দর্পণ; ফরিদ বাঙ্গালী, সম্পাদক, লাখো কণ্ঠ; ড. আসাদুজ্জামান, সম্পাদক, বাংলাদেশ সমাচার; কিশোর আদিত্য, সম্পাদক, প্রথম কথা; দীপক আচার্য্য, সম্পাদক, দ্যা সাউথ এশিয়ান টাইমস; আবু সাঈদ, সম্পাদক, আজকের সংবাদ; আতিকুর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক, দর্পণ প্রতিদিন; রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক, আলোর বার্তা; মো. সেলিম, সম্পাদক, ডেইলি ইভিনিং নিউজ; মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক, অগ্রসর; নাজমুল হক সরকার, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, বর্তমান; শাহাদাত হোসেন শাহীন, সম্পাদক, গণমুক্তি; মো. সাইদুল ইসলাম, সম্পাদক, প্রতিদিনের সংবাদ; নাজমুল আলম তৌফিক, সম্পাদক, ডেইলি সিটিজেন টাইমস; হেমায়েত হোসেন, সম্পাদক, কান্ট্রি টুডে; শেখ জামাল, সম্পাদক, মুখপাত্র।