Close

নীরব সাফল্যের গল্পে অদম্য বাংলাদেশ! নিউজউইকের প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী নিউজউইকের সর্বশেষ সংস্করণে বাংলাদেশের দারিদ্র্য নিরসনে সাফল্য নিয়ে একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অগ্রগতি লক্ষণীয়। যা শেষ নয় সবে শুরু মাত্র।

বাংলাদেশের এ সাফল্যকে ‘নীরব সাফল্যের গল্প’- বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে  বলা হয়েছে: ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দরিদ্রতম দেশ ছিলো। সেখান থেকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে দারিদ্র্য নিরসনের ক্ষেত্রে একটি মডেল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বিদ্যামান থাকার পাশাপাশি মানবাধিকার এবং পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতবদ্ধ থাকার কারণে।

বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্রমবর্ধমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের সফলতা দেখিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। গতবছর জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এমন সাফল্য বিশ্বের মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশই দেখাতে সক্ষম হয়েছে।

বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত দেশ’-এ পরিণত করতে চায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের উন্নতি তুলে ধরা হয়েছে নিউজউইকের এই প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। বাংলাদেশ সরকার সেখানে বিশেষভাবে দৃকপাত করেছে, উন্নয়নের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলার অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

আগামীর বাংলাদেশ কোন পথে এগোবে, তা বোঝার জন্য পদ্মাসেতুকে শক্তিশালী উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে নিউজউইক। তারা বলছে: সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া ৩.৭ কিলোমিটারের সড়ক ও রেল পথ সম্বলিত পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের অনুন্নত অঞ্চলকে (দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল) রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। পূর্বাভাস রয়েছে সেতুর সুফল হিসেবে দেশের জিডিপি ১.২৩ শতাংশ উর্ধ্বমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

‘বাংলাদেশ সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে অংশদারিত্বের ভিত্তিতে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্ট করছে। বিদেশি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আহ্বান জানাচ্ছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতেও বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।’

বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বর্ণনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের পাশাপশি চামড়া, পাট, আইটি পরিষেবা, ঔষধ এবং কৃষিপণ্য রপ্তানি করে থাকে। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে ২০২২ সালে ৬.৯ এবং ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ৭.১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

পত্রিকাটি তাদের প্রতিবেদনে বলছে: সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উন্মুক্ত অর্থনীতি এবং প্রচুর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা লয়েডস ব্যাংকের মতে এর কারণ হচ্ছে-‘নেতিবাচক ভুল ধারণা।’

লয়েডস-এর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের  ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদ, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা, ব্যক্তি-খাতের নেতৃত্বাধীন প্রবৃদ্ধি, শক্তিশালী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং সহজ বিনিয়োগ পরিবেশের (আইন) প্রেক্ষাপট পর্যলোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশকে আদর্শ স্থান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে নিউজউইকের প্রতিবেদনে।

বাংলা অনুবাদ: চ্যানেল আই অনলাইন ডট কম

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top