Close

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী  জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দলটির বর্ষীয়ান নেতা অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম। জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই ঘোষণা দেন। তবে একাধিক প্রার্থী থাকায় সাধারণ সম্পাদক পদে কাউকে ঘোষণা করা হয়নি।

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নেতাকর্মীরা যদি ঐক্যমত্যে না পৌঁছায়, তাহলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করা হবে।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। সম্মেলনকে ঘিরে নতুন সাজে সেজেছে জেলা শহর মাইজদী। মাইজদী-চৌমুহনী চার লেন সড়কের দুই পাশে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। তৈরি করা হয়েছে অর্ধশতাধিক তোরণ। সম্মেলনস্থল শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। যেখানে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার লোকের। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সম্মেলনে আগত নেতা-কর্মীদের বসার সুব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিমের সভাপতিত্বে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ অনেকে।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।

অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্হিত ছিলেন প্রবাসী নেতা, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ কাসেম।

এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সম্মেনস্থলে ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। সকাল ১০টার মধ্যে সম্মেলনস্থলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম হয়। সম্মেলনে আসা নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগই হলুদ, সাদা, গোলাপিসহ বিভিন্ন রঙের টি-শার্ট আর টুপি পরে এসেছেন। সম্মেলনস্থলে পুরুষ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নারী কর্মীদের উপস্থিতিও ব্যাপক।

শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের আশপাশের উঁচু ভবনগুলোতে শোভা পাচ্ছে সম্মেলনে সভাপতি-সম্পাদক পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনুসারীদের টাঙানো বিশাল বিশাল ব্যানার। সড়কের দুই পাশ ছেয়ে গেছে ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে। আলোকসজ্জার বর্ণিল সাজে সেজেছে স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকাও। পাশাপাশি দুটি বিশাল আকৃতির প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নৌকার আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। দুই প্যান্ডেলের মাঝখানের যাতায়াতের পথে তৈরি করা হয়েছে বর্ণিল রঙে সাজানো বেশ কয়েকটি ছোট ছোট গেট। অতিথিদের যাতায়াতের পথে বসানো হয়েছে লালগালিচা এবং রঙিন কার্পেট।

প্রসঙ্গত, জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর। ওই সম্মেলন হয়েছিল শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে। ওই সম্মেলনে প্রস্তাব ও সমর্থনের ভিত্তিতে এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছিলেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের।

পরবর্তী সময় কেন্দ্রে জমা দেওয়া প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবিত কমিটি বাতিল করে ৮৭ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। যাতে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েন একরামুল করিম চৌধুরী। তাঁর ঠাঁই হয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে।কমিটি ঘোষণার পর থেকে দীর্ঘসময় নানান ঘাত প্রতিঘাত, সহিংসতা ও হতাহতের পর সেই কমিটি আর পূর্ণাঙ্গ না করে দুই বছরের মাথায় ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে আহবায়ক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেলকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৮৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top