ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁরা আবারও তৃণমূলে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। শুধু তা–ই নয়, ওই নির্বাচনে বিজেপির জয়ী ৮ বিধায়কও টিকিট কাটলেন মমতার নৌকায় ওঠার জন্য। পুরো রাজ্যেই বিজেপিতে ভাঙনের খেলা চলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শুধু এ ঘটনাই নয়, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের নানা ঘটনাও বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তৃণমূলে যেমন এক কমান্ডে দল চলে, সেভাবে তৈরি হতে পারেনি বিজেপি। বরং বিজেপির কোনো শীর্ষ নেতা এক মন্তব্য করলে আরেক শীর্ষ নেতা আরেক মন্তব্য করেন।
এই রাজ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিজেপির অনেক নেতাই এখন দল ছাড়ার মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দরবারে পৌঁছলেও কেন্দ্রীয় নেতারাও এই রাজ্যের বিজেপি নেতাদের সামাল দিতে পারেননি।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষকে সভাপতির পদ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতির আসনে বসায় বিজেপি। এরপর তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্য রাজ্যে সংগঠনকে মজবুত করার কাজে। তাতেও দিলীপ ঘেষের মুখ বন্ধ হয়নি। বরং তিনি এই রাজ্যে থেকে তাঁর লাগামহীন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও কেন্দ্রীয় কমিটি আগেই দিলীপ ঘোষের মুখ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এসবে কাজ হয়নি, তিনি রয়েছেন আগের মতোই।
পশ্চিমবঙ্গে আরেক বিজেপি নেতা হলেন তথাগত রায়। তিনি একসময় এই রাজ্যের বিজেপির সভাপতি ছিলেন। ছিলেন মেঘালয় রাজ্যের রাজ্যপালও। এখন তিনি রাজ্যপালের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর ফিরে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যে কাজ করছেন বিজেপির হয়ে। এই তথাগত রায় সম্প্রতি দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে রাজ্য বিজেপির কাছে খলনায়ক হয়ে গেছেন। এসব নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছালে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথাগত রায়ের মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।