Close

পিটার হাসের ব্যর্থ সফর

বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় তিনি ঢাকায় ফিরেছেন। গত ২২  ডিসেম্বর সস্ত্রীক দিল্লি যান পিটার হাস।

বাংলাদেশের নির্বাচন এবং বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতির ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গিয়েছিলেন নয়াদিল্লিতে। তবে নয়াদিল্লির বিভিন্ন ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, সেখানে তিনি খুব একটা সফল হতে পারেননি। মার্কিন এই কূটনীতিককে দিল্লি তেমন একটা আমলে নেয়নি, গুরুত্বও দেননি। তবে দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে তিনি ভারতের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং নীতি নির্ধারকদের কারো কারো সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে।

কোনো কোনো সূত্র অবশ্য বলছে, পিটার ডি হাসকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নয়াদিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের আমন্ত্রণে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন এবং সেই আমন্ত্রণে যাওয়ার পর মার্কিন এই কূটনীতিকের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্কদের সাথে নৈশভোজ-মধ্যাহ্নভোজের ছলে নানারকম আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই সমস্ত আলোচনায় বারবার বাংলাদেশ প্রসঙ্গটি উঠে এসেছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন এবং এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা, বিএনপির অংশগ্রহণ না করার ফলে নির্বাচনের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয়গুলো তাদের আলোচনায় স্থান পায়। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, ভারতের কূটনীতিকরা এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে এখনই না ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনটি কীভাবে হয়, কতটুকু সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ হয় সেটা দেখার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ভারত মনে করে যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের কোন পার্থক্য নেই। দুটি দেশই চায় বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। আর সেই অবস্থান থেকেই বাংলাদেশের নির্বাচনটি কীভাবে হচ্ছে এবং জনগণ কতটুকু সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারছে তার ওপর নির্ভর করবে নিরপেক্ষ নির্বাচন বা অংশগ্রহণমূলক হল কি না। তার আগ পর্যন্ত এই নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না বলেও ভারতের কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তাছাড়া যে কোনো দেশের নির্বাচন সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করা হয়। ভারতের নীতি হল কোন দেশের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন বা অন্য বিষয়ে নাক না গলানো। তারা শুধু মোটা দেখতে চায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হচ্ছে কি না। আর সেটি কতটুকু হল তা বোঝা যাবে একমাত্র নির্বাচনের পরই। এরপরও অবশ্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কয়েকজন মার্কিন কূটনীতিকের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তবে এই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

তবে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর সুস্পষ্টভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে এবং এই ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে। আর তাই আপাতত পিটার ডি হাসের বাংলাদেশের ব্যাপারে কিছু করণীয় নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top