নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার দাবিতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আজ সকালে সমাবেশ করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। জেলার ৩৪ টি আশ্রয় শিবিরের প্রায় সবগুলোতে বিভিন্ন অংশে ইংরেজি এবং বার্মিজ ভাষায় লেখা ব্যানার, পোষ্টার হাতে জড়ো হয়ে পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।
‘গোয়িং ব্যাক হোম’ বা চল বাড়ি যাই, ‘লেটস গো টু মিয়ানমার’ বা চল মিয়ানমার যাই, ‘নো মোর রিফিউজি লাইফ’ বা আর নয় শরণার্থীর জীবন – এরকম শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা।
আরো নানা ধরনের বার্তার মধ্যে ছিল ‘কয়েক দশক ধরে আমরা রাষ্ট্রহীন হয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছি। আর কতদিন?’।
জাতিসংঘের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের ঠিক একদিন আগে রোহিঙ্গাদের এই প্রচারণা চালাতে দেখা গেল।
কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মাদ ফারুক বলছেন, “আমাদের মূল দাবি হচ্ছে আমরা আমাদের নিজের দেশে ফিরে যেতে চাই। মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি চাই। সেখানকার নাগরিক হিসেবে সেখানে থাকতে চাই। কিন্তু নিরাপত্তা না থাকলে আমরা যেতে পারবো না”।
“আমরা এখনো ফিরে যেতে ভয় পাই। তাই নিজের দেশে আমরা বেঁচে থাকার নিরাপত্তা চাই। আর এই সব কিছু নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারকে দায়িত্ব নিতে হবে। ফিরে যাওয়ার পর ভবিষ্যতে যদি আমরা আবারও কোন গণহত্যা নির্যাতনের মুখোমুখি হই তার জন্যে দায়িত্ব নিতে হবে।”
তিনি জানিয়েছেন শিবিরে অবস্থানরত সবাই একসাথে জড়ো না হলেও সকল শিবিরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিজেদের মতো করে সমাবেশ করেছেন, শ্লোগান দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে সবমিলিয়ে হাজার দশেক রোহিঙ্গা এতে অংশ নিয়েছেন।
তার ভাষায়, “শিবিরে কেউ আর থাকতে চায় না। আমাদের অনেকেই নিজের দেশে ভাল অবস্থায় ছিলাম। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আর এখন এত অল্প জায়গায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সাথে, খুব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকি। এভাবে কে থাকতে চায়? শরণার্থী জীবন আর নয়।”