প্যারিসে জমকালো আয়োজনে ব্যালন ডি’অরের ৬৮তম আসরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও আকাঙ্ক্ষিত পুরষ্কার জিতলেন রদ্রি হার্নান্দেজ। ১৯৬০ সালের পর প্রথম ও সব মিলিয়ে তৃতীয় স্প্যানিশ পুরুষ হিসেবে ব্যালন ডি’অর হাতে নিলেন রদ্রি।
অথচ সপ্তাহখানেক আগে থেকেই পুরস্কার জয়ী হিসেবে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের নাম ফাঁস করা হয়৷ অনুষ্টানের কয়েক ঘণ্টা আগে জানা যায়, তিনিসহ রিয়াল মাদ্রিদের অন্যরাও অনুষ্ঠান বয়কট করতে যাচ্ছেন। কারণ তারা জানতে পেরেছেন পুরস্কার তাদের হাতে উঠছে না। অনুষ্ঠান চলাকালে এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় আয়োজকেরা জানায়, তারা কেউই জানে না বিজয়ীর নাম।
অবশ্য সেটাই হলো। ভিনিসিয়ুস হলেন দ্বিতীয়, জুড বেলিংহ্যাম তিনে, আর দানি কারভাহাল চারে। তিন রিয়াল তারকা হারলেন ম্যানসিটি মিডফিল্ডারের কাছে।
লুইস সুয়ারেজ মিরামোন্তেস সবশেষ স্প্যানিশ হিসেবে পুরুষদের ব্যালন ডি’অর জেতেন। রদ্রি ৬৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটালেন। মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন স্পেনের আইতানা বোনামাতি। ২০১৮ সালে মেয়েদের পুরস্কার যুক্ত হওয়ার পর প্রথমবার একই দেশ থেকে দুজন এটি জিতলো।
২০২৩ সালের ১ আগস্ট থেকে এই বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে বিজয়ী হলেন রদ্রি। হাঁটুর গুরুতর ইনজুরিতে এই মৌসুম থেকে ছিটকে যাওয়া মিডফিল্ডার ক্র্যাচে ভর করে অনুষ্ঠানে আসেন। এসেই প্রশ্নের মুখে পড়েন, জানতে চাওয়া হয় পুরস্কার পাবেন জেনেই কি এসেছেন? তিনি বলেন, ‘এখানে আসাই তো আমার জন্যে পুরস্কার। দেখা যাক কী হয়, আমার কাছে খুব বেশি তথ্য নেই।’
আজ সোমবার দিবাগত রাতে ‘থিয়েটার দো সাতেলেতে’ ঘোষণা করা হলো ২০২৪ সালের ব্যালন ডি’অর জয়ীর নাম। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ওঠা গুঞ্জন সত্যি করে বিজয়ী হলেন রদ্রি।
পুরস্কার হাতে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ম্যানসিটি তারকা বললেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য রাত। এটা বিশেষ, শুধু আমার জন্যে নয়, আমার পরিবার ও দেশের জন্য।’
গত মৌসুমে ভিনি দলের ও ক্লাবের হয়ে খেলেছেন ৪৯টি ম্যাচ। সেখানে তিনি গোল করেছেন ২৬টি ও সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১১টি। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। অপরদিকে রদ্রি গত মৌসুমে খেলেছেন ৬৩টি ম্যাচ। সেখানে গোল করেছেন ১২টি ও অ্যাসিস্ট ১৪টি। তার দখলে রয়েছে প্রিমিয়ার লিগ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, উয়েফা সুপার কাপ ও স্পেনের হয়ে ইউরো। শেষ পর্যন্ত ভিনিকে দুইয়ে নামিয়ে সেরা হলেন রদ্রি।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফরাসি-ব্রিটিশ সাংবাদিক স্যান্ডি হেরিবার্ট ও আইভরিয়ান ফুটবল লিজেন্ড দিদিয়ের দ্রগবা।
ভিনি ও রিয়াল মাদ্রিদ তারকারা ছাড়াও সেরা দশে থেকে অনুষ্ঠানে আসেননি ম্যানসিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ড।
এদিকে বর্ষসেরা তরুণ হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল। সেরা পুরুষ কোচ রিয়ালের কার্লো আনচেলত্তি, মেয়েদের এমা হায়েস। সেরা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। রিয়াল বর্ষসেরা পুরুষ ক্লাব ও মেয়েদের সেরা বার্সেলোনা। সর্বোচ্চ গোলের পুরস্কার হ্যারি কেন ও কিলিয়ান এমবাপ্পের।