সুশীল সমাজের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ডেইলি স্টার। ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম আজ স্বনামে একটি কলাম লিখেছেন। ‘দ্যা থার্ড ভিউ’ নামে এই কলামে তিনি আওয়ামী লীগ ‘ওয়াক ম্যান সিনড্রোমে’ আক্রান্ত বলে অবহিত করেছেন। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সরকারও ‘ওয়াক ম্যান সিনড্রোমে’ আক্রান্ত বলে তিনি তার নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন। তার নিবন্ধ শিরোনাম হলো- ‘ওয়াক ম্যান সিনড্রোম’ এাফ্লিক্টস দ্যা আওয়ামী লীগ এন্ড আওয়ার গর্ভমেন্ট। এই দীর্ঘ নিবন্ধে তিনি বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ এবং সরকার অন্য কারও কথাই শুনছেন না। শুধুমাত্র নিজেদের কথাগুলোই বারবার শুনছেন এবং বলছেন। এই লেখাটিতে সরকারের তীব্র এবং কঠোর সমালোচনা করেছেন মাহফুজ আনাম। শুধু মাহফুজ আনাম একা না, গতকালই ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যিনি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এর সম্মানিত ফেলো বলেছেন, আর্থিক খাত দুর্বলতার কারণে অর্থনীতিক চাপ বেড়েছে। সেখানেও তিনি আর্থিক দুর্বলতার কথাগুলো উল্লেখ করেছেন, আর্থিক সংস্কারে সরকারের ব্যর্থতার কথা বলেছেন এবং অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারকে দায়ী করে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। কিছু ব্যক্তি, সংগঠন এখন প্রকাশ্য হয়েছেন। এই সংগঠন, ব্যক্তি গুলোর প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা পরিচয় রয়েছে। এদের সবাই একই সূত্রে গাঁথা এবং যে সমস্ত ব্যক্তিরা মাঠে নেমেছেন, তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে তারা বিভিন্ন সময়ে কাজ করছেন এবং ড. ইউনূসকে সমর্থন করেন। তাই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সুশীল সমাজ এখন যে সরকারের বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী প্রচারণায় নেমেছেন, তার নেপথ্যে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মাহফুজ আনামের সম্পাদিত ডেইলি স্টার গত কিছুদিন ধরেই সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করছে। এবার মাহফুজ আনাম নিজেই তার কলামে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন। অন্যদিকে, সংস্কারপন্থীদের বাংলা মুখপাত্র প্রথম আলো এখন সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। মাহফুজ আনাম ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শুধু ঘনিষ্ঠই নয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন, সেই রাজনৈতিক দলের অন্যতম নেতাও ছিলেন। এখন তার সরকারের সমালোচনা বা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করার পিছনে কী কারণ থাকতে পারে তা অনেকেই অনুভব করতে পারছেন। অন্যদিকে, মতিউর রহমান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুধু ঘনিষ্ঠই নয়, তিনি তিনি ওয়ান-ইলেভেনের অন্যতম কুশীলব। মাইনাস ফর্মুলার অন্যতম জনক মনে করা হয় মতিউর রহমানকে। প্রথম আলো গত একমাস ধরে লাগাতার ভাবে সরকার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। প্রথম আলোর শুক্রবারের পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে যে, খেলাপি ঋণে আরেক মাইলফলক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ, উপকারভোগী অনেকেই সুবিধা পাননি অনিয়মের কারণে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে আরেক দফা। প্রতিদিন প্রথম আলো এমন সব প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেগুলো জনমনে সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি করছে। অন্যদিকে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এখন রাজনীতিবিদদের চেয়েও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, রাজনীতিবিদদের চেয়েও বেশি শক্তি নিয়ে গণমাধ্যমে আসছেন এবং প্রতিদিন কোনো না কোনো ইস্যুতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য রাখছেন।
ড. দেবপ্রিয়, ড. ইউনূসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং তিনিও ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম কুশীলব। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেছিলেন। পুরো সিপিডি এখন যেন সরকারবিরোধী প্রচারণার একটা কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়ে সিপিডি লাগামহীনভাবে সরকারের সমালোচনা করছে। এই সিপিডির সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে টিআইবিও এখন সরব হয়েছে। দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে এমনকি অর্থনৈতিক সংকট নিয়েও টিআইবি কথা বলছে। সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, কারো দ্বারা নির্দেশিত হয়ে টিআইবি মাঠে নেমেছে। আর টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ। এখন সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে যে সমন্বিত প্রচারণা চলছে, সেই সম্মানিত প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার নিয়ন্ত্রিত ইউনূস সেন্টার। প্রশ্ন উঠেছে যে, সুশীলরা সরকারের সমালোচনায় কেন আদা-জল খেয়ে নামলো? এর পেছনে কি কোনো রাজনৈতিক অভিপ্রায় আছে? বিশেষ করে যখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস দৃশ্যমান হচ্ছেন।
তথ্যসূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার