প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্মিলিত এবং সময়োপযোগী প্রচেষ্টা কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বহু জীবন বাঁচিয়ে সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে পারে।
তিনি বলেন ‘বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করেছে এবং অনেক জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা করে, অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে মহামারীর কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ মারা যাবে। তবে সরকার এবং এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সমন্বিত এবং সময়োপযোগী প্রচেষ্টা সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে পারে।’
রাজধানী ঢাকায় আজ বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেস্থেসিওলজিস্টস ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন ফিজিশিয়ানস আয়োজিত ‘ব্যথা সম্পর্কিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন-২০২২ এবং ব্যথা বিষয়ে সাম্প্রতিক অগ্রগতি বিষয়ক সপ্তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন-২০২২’-এ সম্প্রচারিত প্রাক-রেকর্ডকৃত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএসএ-সিসিপিপি ‘সঙ্কটজনকভাবে অসুস্থ কোভিড-১৯ রোগীদের জাতীয় নির্দেশিকা’ এবং একই সাথে ‘অক্সিজেনের যৌক্তিক ব্যবহারের নির্দেশিকা’ দেওয়ার জন্য প্রশংসার দাবিদার।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন ‘আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে অ্যানেস্থেশিয়াতে ৪০৯ জন জুনিয়র পরামর্শদাতা, ২,০০০ ডাক্তার এবং ৫,০০০ নার্স বিশেষ নিয়োগ দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করেন এই সম্মেলন সর্বশেষ গবেষণার তথ্য ও কৌশল শেয়ার করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে এবং ব্যথা, ব্যথার ওষুধ, মূল্যায়নের সরঞ্জাম এবং ব্যথা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আন্তর্জাতিক গবেষকদের জন্য একটি ফোরাম গঠনে সহায়তা করবে।
শেখ হাসিনা এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেস্থেসিওলজিস্টস ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড পেইন ফিজিশিয়ানস-বিএসএ-সিসিপিপিকে অভিনন্দন জানান এবং দেশ-বিদেশের অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান।
মানুষ বিভিন্ন কারণে ব্যথায় ভোগে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যথা তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী যা-ই হোক না কেন তাৎক্ষণিক উপশম চাই। ব্যথার ওষুধ উন্নত বিশ্বে অ্যানেস্থেসিওলজির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাব-স্পেশালিটি হয়ে উঠেছে। বিএসএ-সিসিপিপি বাংলাদেশে অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের অধীনে এই সাব-স্পেশালিটি তৈরি করার চেষ্টা করছে।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে এই পেইন সাব-স্পেশালিটি বিকাশের ফলে ক্যান্সার রোগীদের ব্যথার মতো দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থেকে রোগীদের ভোগান্তি কমবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যথার সফল নিয়ন্ত্রণ চিকিৎসার প্রধান দিক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যথা ব্যবস্থাপনায় ন্যানো প্রযুক্তির অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। কখনও কখনও হস্তক্ষেপমূলক ব্যথা ব্যবস্থাপনার এ নতুন কৌশল প্রয়োগকারী রোগীদের জন্য অস্ত্রোপচার এড়ানো যায়।
তিনি বলেন, তিনি জেনে খুশি যে বিএসএ-সিসিপিপি এবং সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্র্রোল অফ হেলথ সার্ভিসেস ডিরেক্টরেট জেনারেল এ সম্মেলনে যৌথভাবে ‘হস্তক্ষেপমূলক ব্যথা ব্যবস্থাপনার নির্দেশিকা’ প্রকাশ করতে যাচ্ছে।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১১৬টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। গত এক দশকে সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। বেসরকারি খাতে, দেশে প্রচুর সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় ১৮,৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি আরও বলেন, দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে ৩০টি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।