Close

সুইস ব্যাংকের একাউন্টে বিএনপির তিন নেতার ৫ হাজার কোটি টাকা

সুইস ব্যাংকের একাউন্ট সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সরকার আনঅফিশিয়ালী সুইস ব্যাংকের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ করছে এবং সেখানে কারা অর্থ পাচার করেছে, কাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে ইত্যাদি তথ্য গ্রহণে চেষ্টা করছে। সম্প্রতি, এ নিয়ে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতদ্বৈধতা প্রকাশ্য হয়েছিল। কিন্তু পররাষ্ট্রসচিব পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন যে, ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটেছে এবং তথ্য গ্রহণের জন্য তারা চেষ্টা করছেন। একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে যে, সুইস ব্যাংকে কার কি অ্যাকাউন্ট আছে সে ব্যাপারে অনানুষ্ঠানিকভাবে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এই তথ্যের মধ্যে দেখা যাচ্ছে যে, বিএনপির তিন নেতা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের নামেই সুইস ব্যাংকের বিভিন্ন একাউন্টে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। সুইস ব্যাংকে যে তিন বিএনপি নেতার নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান, বর্তমানে বিএনপির নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিএনপির নেতা মোরশেদ খান বর্তমানে রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় এবং তিনি অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু তার পুত্র ফয়সাল খান, পুত্রবধূ, কন্যা এবং কন্যার জামাতার নামে সুইস ব্যাংকের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে অন্তত ১২’শ কোটি টাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, সিটিসেল কোম্পানি গঠনের সময় সুইস ব্যাংকে দুইটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন মোরশেদ খান এবং তার পুত্র ফয়সাল খান। ফয়সাল খান ২০০১ সালে সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক থেকে টাকা সুইস ব্যাংকে স্থানান্তর করে সেই ব্যাংকে একাউন্ট খুলেছিলেন। ২০০২ সালে ফয়সাল খানের স্ত্রীর নামে  সুইস ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলা হয়। ২০০২ সালের নভেম্বরে ফয়সাল খান এবং তার স্ত্রীর যৌথ নামে সুইস ব্যাংকের একটি একাউন্ট করেছিলেন। এছাড়াও মোরশেদ খানের জামাতা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এবং মোরশেদ খানের কন্যার নামেও সুইস ব্যাংকে একটি যৌথ একাউন্ট রয়েছে এবং সেই যৌথ একাউন্টে বাংলাদেশি টাকায় ১৮০ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে। মোরশেদ খান আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের মালিকানা ছিলেন। আরব বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রথমে সিঙ্গাপুরের ব্যাংক, তারপর সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে টাকা সরানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে সুইস ব্যাংকে টাকা রাখার শীর্ষে রয়েছেন বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু। আবদুল আউয়াল মিন্টু শুধু সুইস ব্যাংকে না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্তত ১৮টি দেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে। অফশোর ব্যাংকিংয়ের নামে ট্যাক্স হ্যাভেন বলে চিহ্নিত দেশগুলোতেও আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং তার পুত্রদের ব্যাংক একাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে আবদুল আউয়াল মিন্টুর দুটি কোম্পানিরও হদিস পাওয়া গেছে। এই কোম্পানিগুলোর মাধ্যমেই সুইস ব্যাংকে আবদুল আউয়াল মিন্টু টাকা পাঠিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। সুইস ব্যাংকে আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা রয়েছে বলে প্রাথমিক প্রাক্কলনে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই তিন বিএনপি নেতার মধ্যে আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং আমির খসরু এখনো তারেক জিয়ার সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখেন এবং তারেক জিয়ার অন্যতম অর্থদাতা হিসেবেও চিহ্নিত। সরকারি সূত্রগুলো বলছে যে, তারা এখন সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন ব্যাংকে কার কত টাকা আছে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছেন এবং আনুষ্ঠানিক তথ্য পেলেই এই অর্থ পাচারকারীদেরকে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top