বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) দিনগত রাত সাড়ে ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসন ভর্তি হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডামকে মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে মেডিক্যাল বোর্ড পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
সুস্থতা কামনায় বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে জানান জাহিদ।
গত ২২ আগস্টও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতাল নেওয়া হয়েছিল।
পরীক্ষা শেষ করে রাতেই গুলশানের বাসায় ফিরে এসেছিলেন তিনি।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সবশেষ গেল ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছিল।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনা ভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন, এখন সেখানেই তিনি থাকছেন। ২০২১ সালে এপ্রিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে ছয় দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকরা।
নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তের কথা উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।