Close

ব্যয় বাড়ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা

electricity

সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রগাধিকারভুক্ত (ফাস্টট্র্যাক) মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা (১৫ হাজার ৮৭০ কোটি)। সাত খাতে মূলত এই ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্প অনুমোদনের পর ৭ বছর চলে গেছে। এখন পর্যন্ত বাস্তব অগ্রগতি ৪৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ব্যয় বৃদ্ধি সংক্রান্ত খাতগুলো হচ্ছে-চ্যানেল, জেটি, ভূমি উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিভিল কার্যক্রম। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, পরামর্শক, ভ্যাট-আইটি ও আমদানি শুল্ক, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন ও টাউনশিপ নির্মাণেও ব্যয় বাড়ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান এর আগে যুগান্তরকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা রাখতেই সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে জাপান অত্যন্ত কম সুদে বলতে গেলে অনুদানের মতোই অর্থ দিচ্ছে। তারা যেহেতু মেয়াদ ও ব্যয় বাড়াতে সম্মত আছে, সেখানে সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় আগে করা হলেও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিসহ অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেই অনুমতি নেওয়া আছে। তাই আমরা অনেক বিষয়েই আপত্তি তুলিনি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ব্যয় হচ্ছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা আছে। এছাড়া বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি ৪১ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের ব্যয়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৭টি কারণ জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এদিকে অনুমোদনের সময় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু কাক্সিক্ষত বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখন সাড়ে তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ডিসম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)।

প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জেটি, ভূমি উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিভিল কার্যক্রম খাতে ব্যয় বাড়ছে ১৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। এছাড়া পাওয়ার প্ল্যান্ট অঙ্গে বরাদ্দ ছিল ১৬ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। এখন ১ হাজার ৪০১ কোটি ২৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে প্রস্তাবিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার কারণে নিরাপত্তার জন্য এই ব্যয় বাড়ছে। পরামর্শক সেবার পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ খাতে অতিরিক্ত ব্যয় বাড়ছে ৩২৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ভ্যাট-আইটি, আমদানি শুল্ক খাতে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা হতে ২ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এখন দাঁড়াচ্ছে ৫ হাজার ১৮৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ কার্যক্রম খাতে বরাদ্দ ছিল ১০০ কোটি টাকা। এখন বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন ও টাউনশিপ নির্মাণ খাতে বরাদ্দ ছিল ৭১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সেখান থেকে ৩৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে ১০৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার কারণে নিরাপত্তার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। সেই সঙ্গে টাউনশিপ এলাকায় ইটিপি, এসটিপি বা ডব্লিউটিপি স্থাপনসহ আধুনিক নগরায়ণের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে এ খাতে ৩২১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা থেকে ১১৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় কিছু খাতে ব্যয় বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top