একটা প্রশ্ন আমাকে অনেকেই করে থাকেন।
আপনি তো শিক্ষক মানুষ আপনি কেন নিরপেক্ষ নন, আপনি কেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন?
আমার উত্তর: আমি বাংলাদেশকে ভালবাসি এবং আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি, তাই আমি আওয়ামী লীগ সমর্থন করি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিশ্চই কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচ্যুতি ও ব্যর্থতা ছিল এবং আছে। কিন্তু একটা কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, দেশ ও জনগণের জন্য আওয়ামী লীগের যে ‘অর্জন’ তা আর কারও নেই এবং আওয়ামী লীগের দেশ ও জনগণের জন্য যে ‘অর্জন’ তা এই দলের অতীত ও বর্তমানের সকল বিচ্যুতি ও ব্যর্থতার তুলনায় বহু বহু গুণ বেশি।
আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, আওয়ামী লীগের যত না ভুল-ত্রুটি বা কিছু কিছু ব্যর্থতা আছে, তার থেকেও আরো অনেক বেশি আছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও মিথ্যা অপবাদ। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার তৈরির কারখানা হলো পাকিস্তান-পন্থী রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াত সহ অন্যান্য উগ্রবাদী অপশক্তি এবং এগুলো ছড়িয়ে দেয় এদেরই কিছু অন্ধ-সমর্থকগোষ্ঠী। জেনেশুনেই এরা এসকল মিথ্যাচার করে। আর এদেশের কিছু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সাম্প্রদায়িক কীট আছে, তারা এগুলো বিশ্বাসও করে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামী লীগের সরকারে থাকা খুবই জরুরি, এর কোন বিকল্প নেই। আমি শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলছি না, আমি মূল্যবোধের উন্নয়নের কথাও বলছি।
একটা ছোট উদাহরণ দেই। নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের মতো এমন অতি জটিল অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ, আর কোনো দলের পক্ষে করা সম্ভব ছিল? যুদ্ধাপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মূল্যবোধের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে।
মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলাম হলো রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন। বিএনপি হলো রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের জোটের অংশ এবং রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ কৌশলে আলাদা করে না রাখলে তারাও বিএনপির মতোই একটা দল এবং একই রকম ভূমিকা নিতো বাংলাদেশের রাজনীতিতে। মূলধারার বাইরে ধর্মীয় মৌলবাদী দলগুলো মূলত ‘পাকিতন্ত্রে’ বিশ্বাসী। আর মূলধারার বাইরে ‘বাম’ দলগুলো চরম ideologue (মৌলবাদী) এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। এই দলগুলোর নিজের কিছু করার মুরদ নেই, তাদের কাজ শুধু দাবি জানানো। তাদের যা দাবি, তা আওয়ামী লীগকেই সরকারে গিয়ে পূরণ করতে হয়, যেমন ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার’, ‘জঙ্গি দমন’, ‘দারিদ্র বিমোচন’, ‘পরিবেশ বান্ধব নীতি প্রণয়ন’, ‘দুর্নীতি দমন’, ‘সামাজিক সুরক্ষা বলয় তৈরি’ ইত্যাদি।
কাজেই, আমার আশা করার জায়গা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগই। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে অনেক কিছু দিয়েছে, তাই আমার অবস্থান আওয়ামী লীগের পক্ষেই, তথাকথিত নিরপেক্ষ নয়। প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্র আমাকে আর কোন দল দিতে পারবে? আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন ও ভালবাসা আমার দেশপ্রেমেরই অংশ। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আমার আস্থা, শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা আমার দেশপ্রেমের দায়।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বাঙালির মুক্তির ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ইতিহাস।
আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শুভ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী! অনেক অনেক শুভেচ্ছা ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’।
জয়বাংলা!
অনুলিপিঃ মোহাম্মদ এ আরাফাত এর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে।