Close

প্যারিসে আলো ঝলমলে রাতে করিম বেনজেমার হাতেই উঠল ব্যালন ডি’অর

ফলটা জানাই ছিল। অপেক্ষা ছিল কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। প্যারিসে আলো ঝলমলে রাতে করিম বেনজেমার হাতেই উঠল ব্যালন ডি’অর ট্রফি। গত মৌসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবেই প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের বর্ষসেরার এই ট্রফিটি জিতলেন ফরাসি স্ট্রাইকার।

চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা ও শাদা শার্টের ওপর কালো স্যুট পরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন বেনজেমা। অনুষ্ঠান স্থলে আসার পর থেকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছিল এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকাকে।

বেনজেমার সে হাসি অবশ্য পরেও অম্লান ছিল। ৫ম ফরাসি ফুটবলার হিসেবে জিতলেন ব্যালন ডি’অর। পেছনে ফেলেছেন রবার্ট লেভানডফস্কি, কেভিন ডি ব্রুইনা ও সাদিও মানেকে। বেনজেমা পুরস্কারটি নেন তাঁর স্বদেশী ও গুরু কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের হাত থেকে।

অন্য দিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বর্ষসেরা নারী খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ তারকা অ্যালেক্সিয়া পুতেয়াস।

পুরস্কার হাতে বেনজেমা বলেছেন, ‘এটা আমাকে গর্বিত করেছে। আমি কখনো হাল ছাড়িনি। আমার জীবনে দুজন আদর্শ জিদান এবং রোনালদো। আমার মধ্যে সব সময় এ স্বপ্ন ছিল যে, সবকিছু সম্ভব। জীবনে এমন সময় এসেছে, যখন আমি ফ্রান্স দলে ছিলাম না। তবে আমি কঠিন পরিশ্রম করেছি এবং কখনো হাল ছাড়িনি।’

ব্যালন ডি’অরকে লম্বা সময় নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০০৮ থেকে ২০১৭-এই এক দশকে আর কাউকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেননি দুজন। ২০১৮ সালে মেসি-রোনালদোর বাইরে প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জেতেন লুকা মদরিচ।

২০১৯ সালে আবারও পুরষ্কারের মঞ্চে মেসির প্রত্যাবর্তন ঘটে। ২০২০ সালে বাতিল হওয়া ব্যালন ডি’অরটি পাওয়ার কথা ছিল রবার্ট লেভানডফস্কিরই। তবে করোনা মহামারিতে বাতিল হওয়াতে হতাশা নিয়েই থাকতে হয় লেভাকে। পরের বছর কোপা আমেরিকা জিতে ব্যালন ডি’অরে রাজত্ব ধরে রাখেন মেসি।

তবে ২০২২ সালে সেই রাজত্বের অবসান ঘটালেন বেনজেমা। দুর্দান্ত মৌসুম কাটানোর পুরস্কার পাওয়াটা নিশ্চিত হয়েছিল মৌসুম শেষেই। দলীয় কিংবা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—কোনো নিরিখেই বেনজেমাকে বাদ দেওয়ার সুযোগ ছিল না। রিয়ালের লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে দারুণ অবদান ছিল এই স্ট্রাইকারের।

সব মিলিয়ে ৪৬ ম্যাচে গোল করেছিলেন ৪৪টি, করিয়েছেন ১৫টি। লা লিগায় ৩২ ম্যাচে তাঁর গোল ছিল ২৭টি আর চ্যাম্পিয়নস লিগে ১২ ম্যাচে করেছিলেন ১৫ গোল।

কেবল গোল করাতেই নয়, মৌসুমে অনেকগুলো ম্যাচের ভাগ্য একাই বদলে দিয়েছিলেন বেনজেমা। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে একাধিক ম্যাচে একক প্রভাবে ফল বদলে দিয়েছিলেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। পাশাপাশি জাতীয় দলের জিতেছিলেন উয়েফা নেশনস লিগের ট্রফিও। ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে ২-১ গোলে জেতা ম্যাচ করেছিলেন গোলও।

এমন পারফরম্যান্সের পর বেনজেমার ব্যালন ডি’অর না জেতাটাই হতে পারত সবচেয়ে বড় অঘটন। নাহ, তেমন কিছু হয়নি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নামক এক গ্রহের আড়ালে উপগ্রহ হয়ে থাকা বেনজেমা অবশেষে তার প্রাপ্যটা স্বীকৃতিটা বুঝেই নিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top