আগামীকাল পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় কাল ঈদ উদযাপন করবেন।
আজ বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল শনিবার সারা দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর।
ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণে আজ সন্ধ্যায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে শনিবার উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। তিনি দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের আহ্বান জানান।
বায়তুল মোকাররমে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই বিগত কয়েক বছর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হয়েছে। এবার করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে পূর্বের মতোই আনন্দ-উচ্ছাস ফিরে এসেছে। করোনা মোকাবিলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় বিগত কয়েক বছর খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ঈদ জামাত হয়েছে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কিন্তু এবার ঈদগাহ ও খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে এবার রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ জাতীয় ঈদগাহে এবার ঈদের নামাজ পড়বেন। এই ঈদগাহে এবার প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি জামাতে অংশ নিবেন।
রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকাল ১০টায় তাঁর বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে এবার দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউেন্ডশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন ক্বারী মো. ইসহাক মুয়াজ্জিন।
দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়, ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।
তৃতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়, এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী ইমাম হিসেবে থাকবেন এবং মুকাব্বির হিসেবে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান থাকবেন।
চতুর্থ জামায়াত হবে সকাল ১০টায়। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. এহসানুল হক ইমাম হিসেবে থাকবেন এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের চীফ খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।
পঞ্চম ও সর্বশেষ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমাম থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম।
এছাড়া ৫টি জামায়াতে নির্ধারিত কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মুজাহিদ আল সাফিদ বাসসকে জানান, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ হাজার ৭৭টি মসজিদ ছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ২৭০টি স্থানে কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র আতিকুল ইসলাম নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বাসস’কে জানান, এবারের ঈদে ডিএসসিসি’র আয়োজনে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মসজিদগুলোতে ঈদ জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সকলকে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত আদায়ের আহবান জানিয়েছেন।