Close

ইতিহাস! নেই অমরত্বের লোভ আজ রেখে যাই আজকের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন অধ্যাপক আবু তাহের। এই নিয়োগ রাজনৈতিক। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিনন্দনে সিক্ত হচ্ছেন নব নিযুক্ত ভিসি মহোদয়।
আমি অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একজন আওয়ামীলীগ কর্মী। পদ পদবী বিহীন নিধিরাম। আমার কথায় কারো কিছু যায় আসবেনা। নবনিযুক্ত ভিসি সাহেবেরতো নয়ই। তবু্ও নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকার জন্যই এই লেখা।

এই অধ্যাপক তাহের সাহেবকে আমার সরাসরি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি ১৯৮৯_৯০ সনে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের ছাত্রাবস্থায়। তখন আমি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। সেই রক্তাক্ত দিনগুলোতে আমরা যখন জামাত-শিবিরের খুনীদের বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে মরণপন সংগ্রামে লিপ্ত তখন এই অধ্যাপক তাহেরকে দেখেছিলাম খুনি শিবিরের স্বার্থরক্ষক হিসেবে। কলেজে জামাত শিবিরের প্রধান মদদদাতা ছিলেন তখনকার উপাধ্যক্ষ, পরবর্তীতে অধ্যক্ষ নূরুল হক স্যার (প্র‍য়াত)। আর উনার ডানহাত ছিলেন এই অধ্যাপক আবু তাহের। উনাদের মদদে, শিবিরের মামলায় আমাকে গভীর রাতে পুলিশ ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। সে সময় যারা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিল তারা সবাই উনার রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে অবগত। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সেই জামাতি স্বার্থের প্রতিপালক আবু তাহের স্যার আজ আমার মত অযুত-নিযুত কর্মী’র মেধা, শ্রম, ত্যাগের বিনিময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।

খবরটা জানার পর হৃদয়ের রক্তক্ষরণে নিশ্চুপ থাকতে পারিনি। যারা কিছু করতে পারবেন তাদের জানিয়েছি। কিছু হয়নি।

এসব দেখার জন্যই কি আমরা জীবনের সোনালী সময়ে ক্যারিয়ারের কথা না ভেবে দলের জন্য রাজপথে নিজেদের জীবন বিলোনোর যুদ্ধে নেমেছিলাম???

দলে আমাদের পদ -পদবী-অবস্থান থাকা না থাকার কোন প্রশ্ন,অভিযোগ, অনুযোগতো আমাদের নেই। জনকের কন্যা, প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী এতেই আমাদের সব পাওয়া। এর পরও এসব চিহ্নিত জামাতিদের পদায়িত করে আমার মত হাজারো কর্মীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণের জন্ম দিচ্ছে কারা?? এভাবেই কি জনকের নির্মম হত্যাকান্ডের আগে মুশতাকরা শক্তিশালী হয়েছিলো??

৯৬ এর পরে ছাত্রলীগ করা অনেক কর্মী না জেনে উনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কিন্তু সেই দুর্দিনে যারা আমাদের সাথে একই লড়াইয়ের সাথী ছিলেন এমন কেউ কেউ যখন অভিনন্দনের গড্ডালিকায় গা ভাসাচ্ছেন, তখন মনে হচ্ছে এই স্মার্ট স্বদেশে আমরা বোধহয় আনস্মার্টই রয়ে গেলাম।

তবে সান্ত্বনা একটাই, রাজাকারের বাচ্চারা নির্লজ্জ। তারা পাওয়ার জন্য আজ আমাদের ক্ষমতাধরদের পা চাটে।

লেখক: সীমান্ত তালুকদার। সাবেক ছাত্রনেতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top