আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘আমার মা আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন এবং অনেক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম উইয়ন নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি আজ শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে জয় বলেছেন, আমার মায়ের চলে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। শুরুতে সহিংসতার জন্য পুলিশকে দায়ী করে আসছিল বিক্ষোভকারীরা। এরপর পুলিশও আক্রমণের শিকার হয়। বর্তমানে পুলিশ নেই, পুরো দেশের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। প্রথম দুই দিন আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা তাদের পুনরায় সক্রিয় ও পুনর্গঠিত করেছি যাতে করে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারে। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু পুরো অরাজকতা বিরাজ করছে। লুটপাট, হামলা চলছে বিভিন্ন শহরে।
শেখ হাসিনার বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নিয়ে জয় বলেছেন, এই মুহূর্তে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমি জানি এই বিষয়কে নিয়ে অনেক গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু মা কোনও দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেননি। তিনি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি দেশকে ভালোবাসেন। এত কিছুর পরও তিনি সেখানে অবসর ও জীবন কাটাতে চান। তাই তিনি দেশে ফিরতে চান। তিনি বিদেশে নিজের বাকি জীবন কাটাতে চান না। আমরা অপেক্ষা করছি পরিস্থিতি কেমন হয় তা দেখার জন্য। এর ভিত্তিতে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন রাজনীতিতে ফিরবেন কি না। তিনি বাংলাদেশে ফিরতে চান।
শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফেরার পরিকল্পনার বিষয়ে তার ছেলে বলেছেন, আমি বাংলাদেশ যাই বা না যাই, এটি বড় কিছু না। আমার মা দেশ ছাড়তে চাননি। কিন্তু আমরা সবাই ভেবেছি বিদেশে তিনি নিরাপদ থাকবে। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমাদের দলের কর্মী-সদস্যদের ওপর হামলা জোরদার হয়েছে। আমার মনে হয়, তখন হামলাকারীরা ভেবেছে আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। দৃঢ় নেতৃত্ব ছাড়া আওয়ামী লীগের ফিরে আসার কোনও সুযোগ নেই। তাই পরিবার হিসেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আওয়ামী লীগকে এমন অবস্থায় ফেলে দিতে পারি না। আওয়ামী লীগের জন্য এই সিদ্ধান্ত। এখনও দলটি দেশের পুরনো ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দর। আমাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছে। সারা দেশে লাখো কর্মী রয়েছে। আমরা তাদের পরিত্যাগ করতে পারি না।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে তিনি বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত এটি একটি অসাংবিধানিক সরকার। এই সরকার মনোনীত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা তাকে চেয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী নয়। কোনও নির্বাচন হয়নি, তিনি একেবারে অনির্বাচিত। তবু যা ঘটার ঘটে গেছে। আমরা একেবারে অসাংবিধানিক পরিস্থিতিতে রয়েছি। এখন আমরা দেখতে পাবো তারা কেমন কাজ করে, তারা আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারে কিনা। এটিই সবার আগে করতে হবে। পরে দেশে সাংবিধানিক গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। দেখা যাক তারা এটি করতে সক্ষম হয় কিনা। আমার মনে হয় জবাব পেতে খুব বেশি দিন লাগবে না।
বাংলাদেশে বিক্ষোভের পিছনে বিদেশি মদত থাকার সন্দেহের কথা তুলে ধরেছেন জয়। তিনি বলেছেন, আমি মনে করি, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এই পরিস্থিতির পিছনে রয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় টাকা ঢেলে পরিস্থিতি উত্তেজিত করা হয়েছে। পরে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়ে থাকতে পারে।