আলোচিত ও সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে নিজ এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ। গত বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর দলের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরের সঙ্গে পেকুয়ায় পৌঁছান।
এরই মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সালাউদ্দিন আহমেদের গাড়িবহর পেকুয়ায় পৌঁছানোর বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ রকম একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যে গাড়িতে (জিপ) চড়ে সালাউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, সেটির নম্বর চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। এটি মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জিপ। তিনি সামনে সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা যায়, সালাউদ্দিন আহমেদকে বহন করা গাড়িটি (চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩) এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন। এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে এটি ২০১০ সালে নিবন্ধন করা। ঠিকানা লেখা আছে এস আলম ভবন, চট্টগ্রাম নগরের আছদগঞ্জ। এটি এস আলম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়। বিআরটিএর চট্টগ্রামের উপপরিচালক আইনুল হুদা গাড়িটি এস আলম গ্রুপের নামে নিবন্ধন করা বলে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ জুন কক্সবাজারে জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সালাউদ্দিন। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন। ৬২ দিন পর ওই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেন তিনি। সালাউদ্দিন কক্সবাজার-১ আসন থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১০ বছরের বেশি সময় পর গত বুধবার নিজ জেলা কক্সবাজারে যান সালাউদ্দিন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর দলের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরের সঙ্গে তার গ্রামের বাদি পেকুয়ায় পৌঁছান। সেখানে তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর আগে সালাউদ্দিন চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানায় দেশের ছয়টি ব্যাংক। দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর একে একে সামনে আসে এস আলম গ্রুপের দুর্নীতি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।