কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স থেকে প্রাপ্ত টাকা গণনা করে এবার এ যাবতকালের সর্বোচ্চ আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গেছে।
গত ৭ অগাস্ট নয়টি দানবাক্স খুলে সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল মসজিদের নয়টি দানবাক্স থেকে পাওয়া যায় সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।
এবার টাকা গোনার কাজ তত্ত্বাবধানকারী কিশোরগঞ্জ রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “সমুদয় টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে।”
শনিবার সকাল ৯টার দিকে ডিসি ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এবং এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ৩ মাস ১৩ দিন পর মসজিদের ১০টি দানবাক্স খোলা হয়। পর টাকা রাখা হয় ২৯টি বস্তায়।
টাকা গণনার কাজে ২৮৫ জন মাদরাসা ছাত্র, ব্যাংকের ৭৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ কমিটির ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১২ জন নির্বাহী হাকিম ও পর্যাপ্ত সংখ্যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অংশ নেন।
কিশোরগঞ্জের ডিসি ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এর অন্তর্ভুক্ত মাদরাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া দানের টাকায় জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা।
জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে।
কথিত আছে, প্রায় পাঁচশত বছর আগে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরে ওই স্থানে মসজিদটি নির্মিত হয়।
জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।