Close

অবশেষে জিয়া পরিবার মুক্ত হচ্ছে বিএনপি

অবশেষে জিয়া পরিবার মুক্ত হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কবে, কখন, কীভাবে এ পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে কেউ কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। তবে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে পরিবর্তনের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
বেশ কিছুদিন ধরে, বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে বিএনপিতে পরিবর্তনের আওয়াজ উঠেছিল। যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ এবং তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক সেজন্য এমন একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার দাবি উঠেছিলো যিনি দলের ভেতর আছেন এবং দলের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে সময় দেন। এরকম বাস্তবতা থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম সামনে এসেছিলো। কিন্তু বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে প্রচন্ড বিরোধীতাও ছিলো।
বিএনপির অনেক নেতাই বলছিলেন যে, জিয়া পরিবারের নামেই বিএনপি চলে, জিয়া পরিবার ছাড়া বিএনপি কয়েক টুকরো ভেঙ্গে যাবে। তবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে দলের নির্বাহী নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেন। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকছেন, দলের ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিতে পারছেন না। সেজন্য তিনি দলের উপদেষ্টা হিসেবে থাকার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার পরেই বিএনপিতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
অন্যদিকে খালেদা জিয়াও যেহেতু দলের দায়িত্ব এখন পালন করতে পারছেন না সে কারণে তিনি দলের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকার ব্যাপারে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিলেও সকলে অপেক্ষা করছিলেন যে, এই ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়ার মনোভাব কি হবে।
গতকাল বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো এবং সেখানে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা তাকে বিএনপির এই নতুন মেরুকরণের প্রস্তাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। সে সময় বেগম জিয়ার উত্তর ছিলো ইতিবাচক। তিনি এখন মোটেই রাজনীতিতে আগ্রহী নন এবং দলের স্বার্থে যেটি নেতারা ভালো মনে করেন সেটিই করার ব্যাপারেই তিনি সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর ফলে বিএনপিতে এখন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আর কোন নিয়ন্ত্রণের বাঁধা থাকলো না। তবে এ পরিবর্তন প্রক্রিয়া বিএনপি কিভাবে করবে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এ পরিবর্তন দুভাবে হতে পারে। প্রথমত, তাৎক্ষণিকভাবে এ পরিবর্তন করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মঈন খান হতে পারেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তবে বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন, বিএনপিতে এত বড় পরিবর্তন কোন সম্মেলন ছাড়া করা উচিত হবে না। তারা মনে করছেন যে, যথাশীঘ্র উচিত বিএনপির সম্মেলন ডাকা উচিত এবং এ সম্মেলনে সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপিতে নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
তবে বিএনপিতে এ নিয়ে একটা প্রবল বিরুদ্ধ মতও রয়েছে। অনেকে মনে করেন যে, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার বাইরে বিএনপিতে যদি কেউ নেতৃত্ব নেন তাহলে বিএনপির মধ্যে অনৈক্য দেখা দিতে পারে। এখন যেমন বেগম জিয়া বা তারেক জিয়াকে সকলে মানেন তখন হয়তো এরকম পরিস্থিতি নাও হতে পারে। এসমস্ত বাস্তবতাগুলো বিবেচনা করেই বিএনপির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে অনেকে মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top