Close

একটি স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র – মোঃ শামসুল আরিফ

একটি স্বপ্নের সুন্দর মানবিক রাষ্ট্র হওয়া উচিত সকল মানুষের নিরাপদ আবাসস্থল, যেখানে একজন মানুষ জাতী ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশ করতে পারবে ও তার স্বাভাবিক কাজ ইচ্ছে গুলো কোন বাধ্যবাধকতাহীন ভাবে করতে পারবে। যে লিখতে চাই সে সামাজিক মুল্যবোধ রাষ্টের প্রতি দায়িত্ব পালন করে কাউকে মনে অপ্রাসঙ্গিক আঘাত না দিয়ে লিখতে পারবে, সমাজের কুসংস্কার তুলে ধরতে পারবে। যে আঁকতে চায় সে তার মনের মাধুরি মিশিয়ে আঁকতে পারবে। যে শিল্পী গাইতে চায় সে গাইতে পারবে তার প্রিয় গান গুলো।

স্বাধীন রাষ্ট্রের একজন চলচিত্র নির্মাতা নিজের মতো করে চলচ্চিত্র নির্মান করতে পারবে।  একজন ধার্মিক তার বিশ্বাস মতে ধর্ম পালন করতে পারবে।  একজন দার্শনিক তার চিন্তাধারার মাধ্যমে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে চিন্তা গবেষনা করতে পারবে।

স্বাধীন রাষ্টের তরুন সমাজ সামাজিক রাজনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে ভুমিকা রাখতে পারে। তরুনদের চিন্তা চেতনায় রাষ্ট্র কখনো হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা। রাষ্ট্র তরুণদের উৎসাহ দিতে হবে।

শ্রমজীবি মানুষ তার নায্য অধিকার পেতে রাষ্ট্র সাহায্য করবে এবং কর্মক্ষেত্রে আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাধীন রাষ্ট্রে বুদ্ধিজীবীদের অনেক দায়িত্বশীল হতে হয়,তারা মূলত সমাজের পথপ্রদর্শক। তাই রাষ্ট্রের উচিত বুদ্ধিজীবীদের মূল্যায়ন করা।

সাম্প্রদায়িকতা রোধ করতে হলে জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নয়ন জরুরি। শক্তি প্রয়োগ করে এটি হয়তো সাময়িক দমিয়ে রাখা যায় কিন্তু এর বিষবৃক্ষ শিকড় ছড়াতে থাকে।  মানুষের সচেতনা মূল্যবোধ সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন করে সাম্প্রদায়িকতা রোধ করা যায়।

দেশে সামাজিক সংস্কৃতি উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং তা সমাজের সকল স্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে

রাজনৈতিক ও ধর্মীয়  নেতৃবৃন্দকে সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করতে হবে, রাষ্ট্র তা আইনে ও সচেতনতার মাধ্যমে  নিশ্চিত করবে।

রাষ্ট্রের সকল সুনাগরিকের উচিত জ্ঞানের ও মনের সংকীর্ণতা দূর করে ন্যায় ভিত্তিক দূর্নীতিমুক্ত, সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। সবাই মিলে একটি দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারলে সাম্প্রদায়িকতাও দেশ থেকে দূর হবে।

একটি রাষ্ট্রের উপাদান হলো নিদিষ্ট ভূখন্ড,  জনসংখ্যা, সরকার সারর্ভোমত্ব,জাতীয়তা। এই ৫টি উপাদান দিয়ে রাষ্ট্র গঠিত হয়।

ধর্ম রাষ্ট্রের কোন উপাদান নয়। ধর্ম হলো মানুষের বিশ্বাস ও একটি জীবন ব্যাবস্থা। কোনো ধর্মই মানুষের অকল্যাণের কথা বলে না৷ পৃথিবীর সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে৷ তাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে কেউ যাতে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে৷ দেশের প্রতিটি মানুষকে যদি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলেও দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর হবে৷

তাই একটি স্বাধীন অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের সুনাগরিকের উচিত একে অপরের ধর্মকে বিশ্বাস কে সর্ম্মান দেওয়া।  তা হলে আমরা একটি উন্নত অসাম্প্রদায়িক শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র পেতে পারি। একটি কল্যাণমূলক অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের  কাছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশ্ব অনেক নিরাপদ থাকে।

লেখকঃ মোঃ শামসুল আরিফ। প্যারিস, ফ্রান্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top