দেশব্যাপী নাশকতা ও নৃশংসতার ঘটনায় কোনো অপরাধীকে ছাড় না দেওয়ার দাবি জানিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে জামায়াত-বিএনপি কর্তৃক সংঘটিত ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবকে ব্যর্থ করতে গোয়েন্দা প্রতিবেদন বাস্তবায়নে কোনো ব্যর্থতা ছিল কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন।
তাঁরা ছাত্রলীগে আরও মেধাবী শিক্ষার্থীদের যোগদানে আকৃষ্ট করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালীকরণ এবং জনপ্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকেরা এসব কথা বলেন। এডিটরস গিল্ডের উদ্যোগে এ আয়োজনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও হেড অব নিডজ উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকেরা বলেন, তাঁরা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছেন এবং তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত।
মহাখালীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার কথা তুলে ধরে ডিবিসি সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, বেলা তিনটার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য ছিলেন না। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য সেখানে ছিলেন না এবং কেন একজন কর্মকর্তা তাঁর বাহিনী নিয়ে জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন?’ তিনি বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল এবং সে কারণেই পুলিশ রাজধানীর আশপাশে চেকপোস্ট বসায়। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, রাজধানীতে কোনো পিঁপড়া প্রবেশ করতে পারবে না, অথচ হাতি প্রবেশ করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য আত্মসমালোচনা করার পরামর্শ দিয়ে পিন্টু বলেন, গত ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের অফিস রক্ষায় কেন সেনাবাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজন পড়ল।
ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের এই বিপর্যয় ও নৃশংসতায় দলের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। দলে রদবদলের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও তদারকির পরামর্শ দেন এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম এই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনার ওপর জোর দেন।
ডিবিসির এডিটর ইন চিফ ও সিইও মনজুরুল ইসলাম সাম্প্রতিক ঘটনা কেন্দ্র করে আত্মসমালোচনা করার এবং জনপ্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করার পরামর্শ দেন।
আবেদ খান বলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাঁদের আস্থা ও বিশ্বাস থাকায় তাঁর জন্য যা প্রয়োজন তা করতে পারেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করার সময় এসেছে। কারণ, তারা এখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের যন্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু।